শহিদুল ইসলাম : ধনবাড়ী প্রতিনিধি
সাংবাদিক পরিচয়ে প্রেম-বিয়ে অতঃপর নগদ টাকা ও গহনা হাতিয়ে নিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার মমিনপুর গ্রামের মোঃ বাবলু মিয়ার ছেলে সাংবাদিক পরিচয়ধারী মোঃ রনি (২৮) ওরফে শাহ পরানুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে। যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় প্রায় সময় স্বামী শাহ পরানুল ইসলাম রনির নির্যাতনের শিকার হন ভুক্তভোগী নারী ।
এ ঘটনায় স্বামী শাহ পরানুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ মোকাম টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ জুডিঃ ম্যাজিঃ সখিপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী । স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে হুমকির মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগী নারী সহ তার পরিবার।
ভুক্তভোগী নারী জানায়, ১মাস আগে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার চতল বাইদ গ্রামের মোঃ আব্বাস সিদ্দিকি এর মেয়ে আমার সাথে টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার মমিনপুর গ্রামের মোঃ বাবলু মিয়ার ছেলে সাংবাদিক পরিচয়ধারী মোঃ রনি (২৮) ওরফে শাহ পরানুল ইসলাম রনির বিয়ে হয় । বিয়ের ১ মাস যেতেই যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে আমার স্বামী শাহ পরানুল ইসলাম রনি । আমি যৌতুকের টাকা দিতে রাজি না হলে আমার স্বামী প্রায় সময় আমার উপর চালাতো অমানবিক নির্যাতন ।
কিন্তু গত ৬ ফেব্রুয়ারি আমার স্বামী মোঃ রনি (২৮) ওরফে শাহ পরানুল ইসলাম রনি আমার বিবাহের সময় আমার অভিভাবক আমার পিতা নগদ ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ) টাকা ব্যবসার জন্য দিয়েছিল আমার বিয়েতে আমাকে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য আমার পরিবার আমাকে গলায় ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের হার, ৮ আনি ওজনের কানের ঝুমকা, হাতে ১ ভরি ওজনের ২টি বালা দিয়েছিল
যার মূল্য অনুমান ২,৫০,০০০/- (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) এ সবকিছু নিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন এবং চলে যাওয়ার সময় বলে যান পাঁচ লক্ষ টাকা দিলে সংসার থাকবে তা না হলে আর সে ফিরবে না ।
পরে ভুক্তভোগী নারী নিরুপায় হয়ে তার বাবাকে ঘটনা জানালে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার প্রার্থী হন। বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী ।
এদিকে বিচার প্রার্থী হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় শাহ পরানুল ইসলাম রনি । সে নিজেকে অনেক বড় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায় তার অনেক ক্ষমতা তার কথায় টাঙ্গাইল জেলার সব প্রশাসন উঠে বসে তার সঙ্গে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সাথে সু-সর্ম্পক তার কেউ কিছুই করতে পারবে না ।
আলাপকালে ভুক্তভোগী নারীর মা বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়ের জামাই আমার মেয়েকে নানা সময়ে নির্যাতন করতো। তাই মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে মেয়ের জামাই এর কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করেছি আমরা গরিব আমরা এতো টাকা কোথায় পাবো আমাদের সাধ্যমত ব্যবস্থা করে দিবো এরপরও নির্যাতন থেমে থাকেনি।
বিচারের জন্য আমার মেয়েকে নিয়ে মানুষের দারে দারে ঘুরছি। মেয়ের জামাই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ায় কেউ বিচার করে দেয়নি। পরে সুবিচারের আশায় আমার মেয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছে।
আদালতে মামলা দায়ের করায় মেয়ের জামাই ও তার সহযোগীরা মামলা তুলে নিতে আমাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এতে আমার মেয়ে এবং আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মেয়ের জামাই এর পরিবারে খোজ খবর নিয়ে দেখি বিয়ের সময় সে যাদের বাবা মা বানিয়ে বিয়ের সময় নিয়ে এসে ছিল তারা আসলে তার বাবা মা না ,তাদেরকে সাজিয়ে নিয়ে এসেছিল এই প্রতারক এবং আমরা আরো জানতে পারি তার বর্তমান স্ত্রী ও ২জন ছেলে মেয়ে আছে । আমাদের কাছে তার ১ম স্ত্রী সন্তানের কথা গোপন করে আমার মেয়েকে প্রেমের ফাদে ফেলে বিয়ে করেছে । তার মূল উদ্দেশ্য আমাদের থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। আমি ও আমার পরিবার এর সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার চাই৷
এলাকাবাসী জানান , পড়াশোনায় ৫ম শ্রেণির গন্ডি পার হতে না পারলেও নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে দাবি করতো শাহ পরানুল ইসলাম রনি । এসব মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ধনবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতো এই প্রতারক। "DPC News 24" ' নামে একটি ফেসবুক পেজ সে চালাতো এই পেজটি ছিল তার সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার মূল হাতিয়ার। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপজেলা প্রসাশন এর সাথে সু-সর্ম্পক রয়েছে দাবী করতো। প্রতারনাই হচ্ছে তার মূল পেশা । এলাকাবাসী এই প্রতারক চাদাবাজের কঠিন শাস্তির দাবী করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মোঃ রনি (২৮) ওরফে শাহ পরানুল ইসলাম রনির দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।